জেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার এক নারী পরিবার ও সমাজের কাছে জীবিত হলেও নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ বলছে তিনি ‘মৃত’ এ কারণেই নিতে পারছেন না করোনার টিকা। এছাড়াও নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রাজিয়া সুলতানাকে। মো. খাদেমুল ইসলামের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা সদর উপজেলাধীন বটতৈল ইউনিয়নের কবুরহাট গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা।
রাজিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পরও ডাটাবেজের ভুলের কারণে কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন রকমের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এমন কি জীবিত ও ভোটার আইডি থাকা সত্ত্বেও ভোটার তালিকায় রাজিয়ার নাম না আসায়, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জাতীয় নির্বাচনেও ভোট দিতে পারছেন না।
স্থানীয় ব্যাংক শাখায় একাউন্ট করতে গেলে সেখান থেকেও বলা হয় তার পরিচয় পত্রে সমস্যা আছে। তাই রাজিয়া কোনো ব্যংক একাউন্ট খুলতে পারছেন না। সিমের দোকানে গেলে বিক্রেতা তাকে সিম কার্ড দিচ্ছে না।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পারেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজের তথ্য অনুযায়ী রাজিয়া এখন মৃত।
জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় থেকে রাজিয়াকে বলা হয় স্থানীয় ইউপি পরিষদে যোগাযগ করে চেয়ারম্যানের নিকট থেকে জীবিত থাকার একটি প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে আবেদনপত্র জমা দিতে। পরে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে তা জমা দেন।
এই বিষয়ে বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, রাজিয়া সুলতানা এখনো জীবিত আছেন। তিনি কিভবে জীবিত থেকেও মৃত হলেন তা নির্বাচন অফিস বলতে পারবে। আমরা রাজিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জীবিত থাকার একটি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি। আমরা চাই দ্রুত এটার একটা সমাধান হোক।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. সহিদুর রহমান বলেন, রাজিয়া সুলতানা জীবিত থাকার পরও জাতীয় নির্বাচন কমিশন ডাটাবেজ তাকে মৃত দেখাচ্ছে। এমনটা কেনো হতে পারে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়তো ডাটাবেজে তথ্য ইনপুট করার সময় তথ্য সংগ্রহকারী ভুলক্রমে জীবিত রাজিয়াকে মৃত দেখিয়েছিলেন। তিনি এই সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদন করেছেন। এখন আশা করি দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
১৯৮৮ সালে ২৩ মে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর শেখপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন রাজিয়া। কষ্টিয়ার সদর উপজেলার কবুরহাট গ্রামের মো. খাদেমুল ইসলামের সাথে ২০০৫ সালে রাজিয়ার বিয়ে হয়। পরে এখান থেকেই রাজিয়া ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে জীবিত রাজিয়াকে মৃত দেখানো হয়েছে।