শিবপুর উপজেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী জার্নাল: ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদীর শিবপুরে প্রবাস ফেরত আনোয়ার হোসেন ভূইয়া (৩৫) নামের একজনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। রবিবার (১ আগস্ট) দুপুরে পুটিয়া ইউনিয়নের সৈয়দনগর পাঁচভাগ গ্রামের পারিবারিক কবর স্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। আনোয়ার হোসেন একই এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে জেলা জজ আদালতের আদেশে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান কাউছার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালামের উপস্থিতিতে ওই লাশ উত্তোলন করা হয়।
শিবপুর মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত আবুল কালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দাফনের দুই মাস পর রবিবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য মৃত আনোয়ার হোসেন ভূইয়ার লাশ উত্তোলন করে দুপুরে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে লাশটি পাঠানো হয়।
মামলা ও ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সৌদি প্রবাসী আনোয়ার হোসেন ভূইয়া গত ২৪ মে বাংলাদেশে এসে শিবপুরস্থ বানিয়াদী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাসরত স্ত্রী ও সন্তানদের নিকট আসে। এরই মধ্যে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার স্ত্রী সুমি বেগমের সাথে টাকা পয়সা ও পারিবারিক বিষয়ে বিরোধ দেখা দেয়।
বিষয়টি তাঁর ভাই রুহুল আমিন ভূইয়াকে জানান আনোয়ার হোসেন ভূইয়া। ২৮ মে সুমি বেগম ফোন করে আনোয়ার হোসেনের অসুস্থতার কথা জানান দেবর মনির হোসেনকে।
খবর পেয়ে মনির হোসেন এসে আনোয়ার হোসেনকে অচেতন অবস্থায় শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহ হলে আনোয়ার হোসেনের ভাই ময়নাতদন্তের কথা বললে স্ত্রী সুমি বেগম ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করে। এদিকে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করার বিষয় নিয়ে মৃত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রীর সাথে তার ভাই রুহুল আমিনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জের ধরে ২৭-০৬-২১ইং রুহুল আমিন বাদী হয়ে নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা (পিটিশন নম্বর ৫০৩/২১) দায়ের করেন ।
এতে আসামি করা হয় ৮ জনকে। আদালতে মামলাটি শুনানির পর বিচারক শিবপুর মডেল থানায় পাঠিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ দেয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক তদন্ত আবুল কালাম কবর থেকে লাশ উত্তোলনের মাধ্যমে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চাইলে আদালত ২৮ জুলাই অনুমতি দেয়। আদালতের আদেশ পেয়ে রবিবার (১ আগস্ট) কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।