আলমগীর খন্দকার, নরসিংদী জার্নাল ডট কম: দীর্ঘ প্রায় চার ঘন্টা অভিযান শেষে আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক উপ-কমিটি থেকে বাদপড়া আলোচিত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার রাত টার দিকে গুলশান ২ এর ৩৬ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ি থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। (২৯ জুলাই) বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টায় গুলশানের বাসায় অভিযানে যায় র্যাব।
অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় আমরা অভিযান চালিয়েছি। তার বাসা থেকে আমরা বিদেশি মদ, বিদেশি মুদ্রা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, চাকু ও হরিণের চামড়া জব্দ করেছি। তাকে আটক করে বিস্তারিত জজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদরদফতরে নিয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
অভিযানে থাকা র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, অভিযানের শুরুতেই র্যাব সদস্যদের দেখে অঝরে কেঁদেছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। যদিও বের হওয়ার সময় অনেকটা হাসিমুখেই ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরগরম হেলেনা জাহাঙ্গীর ইস্যু। ফেইসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম সামনে আসে। সেই কারণেই তাকে উপকমিটির পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক।
এই দিকে ‘চাকরিজীবী লীগ’ নামের সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই সংগঠনটি দুই-তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই দিকে আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এই সংগঠনটির সাথে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
ফেইসবুকে সক্রিয় হেলেনা জাহাঙ্গীর মূলত একজন নারী উদ্যেক্তা। তিনি কিছু দিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পাওয়া এই নেত্রী সম্প্রতি কুমিল্লা -৫ আসনের উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের পার্থী হতে চেয়েছিলেন সেখানেও মনোনয়ন পাননি।
যানা যায়, অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয়ে যায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের। তার পরেই হেলেনা নামের সাথে যুক্ত হয় জাহাঙ্গীর। বিয়ের পর পড়াশোনা করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার পর থেকেই হেলেনা জাহাঙ্গীর একজন উদ্যেক্তা হিসেবে নিজের ক্যরিয়ার শুরু করেন।
ব্যবসার মধ্যে, হেলেনা জাহাঙ্গীর প্রিন্টিং, প্যাকেজিং, অ্যামব্রয়ডারি , স্টিকার, ওভেন গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। জয়যাত্রা গ্রুপের আওতায় এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এছাড়া ‘জয়যাত্রা নামের একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের মালিকও তিনি। হেলেনা জাহাঙ্গীরের প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে বলে যানা যায়।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাবা মুরহুম আব্দুল হক শরীফ একজন জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন। হেলেনা জাহাঙ্গীরের জন্ম কুমিল্লা হলেও শৈসব কেটেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের হালিশহরের মাদারবাড়ী, সদরঘাট এলাকায়। স্থানীয় কৃষ্ণচূড়া স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি।